মালয়েশিয়ায় কাল থেকে শুরু হচ্ছে বৈধকরণ প্রক্রিয়া
দীর্ঘ প্রতিক্ষারপর মালয়েশিয়ায় কাল থেকে শুরু হচ্ছে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া। আর এ প্রক্রিয়ার নাম দেয়া হয়েছে রিকেলিব্রেশন। এ কর্মসূচিতে থাকবে না কোনো এজেন্ট বা ভেন্ডর। শুধু কোম্পানি মালিক পক্ষ বা নিয়োগকর্তা অবৈধ কর্মীদের নামসহ সরাসরি ইমিগ্রেশনের rekalibrasi@imi.gov.my এই ইমেইলে আবেদন করতে হবে।
কাল থেকে কৃষি, বৃক্ষরোপণ, নির্মাণ ও উৎপাদন এ চারটি সেক্টরে কর্মী নিয়োগের আবেদন করতে পারবেন কোম্পানী মালিক পক্ষ বা নিয়োগকর্তারা। বৈধকরণ প্রক্রিয়া চলবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। এ কর্মসূচির আওতায় সোর্স কান্ট্রি অন্তর্ভুক্ত ১৫টি দেশের অবৈধ অভিবাসীরা বৈধ হতে পারবেন বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে।
রোববার (১৫ নভেম্বর) দেশটির মানব সম্পদ মন্ত্রনালয় (কেএসএম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগের (জেটিকেএসএম) ইন্টিগ্রেটেড ফরেন ওয়ার্কার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (ইপিপ্যাক্স) www.eppax.gov.my এর মাধ্যমে ও আবেদন করতে হবে।
মানব সম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান বলেছেন, নিয়োগকর্তাকে নিশ্চিত করতে হবে যে তারা শর্তাদি এবং যোগ্যতার মানদন্ড নির্ধারণ করেছেন। এ ছাড়া আগ্রহী নিয়োগকারীদের জেটিকেএসএম-তে আবেদনের আগে ইমিগ্রেশন বিভাগের কাছ থেকে নিশ্চয়তা নিতে হবে।
এ বিষয়ে যে কোনো প্রশ্ন, নিয়োগকর্তা ৫১৯২ ০৩-৮৮৮৬ এর মাধ্যমে জেটিকেএসএমের বিদেশী শ্রমিক বিভাগের কন্ট্রোল ইউনিট এবং পে-রোলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, কাছের শ্রম অফিসে উপস্থিত থাকতে পারেন বা eppaxteam@mohr.gov.my ইমেলের মাধ্যমে মালিক পক্ষের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে বৈধকরণ প্রক্রিয়া ঘোষণার পরই মরিয়া হয়ে উঠেছে দালাল চক্র। দালাল চক্রের প্ররোচনায় পড়ে টাকা-পাসপোর্ট লেনদেন না করতে সতর্ক করেছে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন।
শনিবার মিশনের ফেসবুক পেইজে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া সরকার কোনো এজেন্ট বা ভেন্ডর নিয়োগ করেনি, কোম্পানি ছাড়া অন্য কারো মাধ্যমে বা নিজে নিজে ইমিগ্রেশনে গিয়ে বৈধ হওয়া যাবে না। নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি নিজেই সরাসরি করবে। কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন না করার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে হাইকমিশন।
এর আগে ২০১৬ সালে ‘রিহায়ারিং প্রোগ্রাম’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় মালয়েশিয়া সরকার। প্রকল্পটি শেষ হয় ২০১৮ সালে। সে সময়ও হাইকমিশন থেকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল। সচেতনতামূলক লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছিল। এরপরও দালাল ও ভেন্ডরের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন লাদেশিরা।
এ দিকে বৈধকরণ প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে প্রবাসী বাংলাদেশীরা পাসপোর্ট রি-ইসু ও নতুন পাসপোর্ট প্রদানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রবাসীদের চেয়ে মালয়েশিয়াকে প্রাধান্য দিয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট প্রেরণ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রবাসীরা।
ইতিপুর্বে যেখানে একটা পাসপোর্ট রি-ইসু হয়ে আসতে সময় লাগতো ১থেকে দেড়মাস। কিন্তু চলমান করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন জটিলতার কারণে সময় লেগে যাচ্ছে প্রায় তিন থেকে চার মাস। দীর্ঘ সময় লাগার কারণে অনেকেই বৈধ ভিসা থাকার পর ও দেরিতে পাসপোর্ট পাওয়ায় স্পেশাল পাস বাবদ গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
এ বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীরা বলছেন, বহু প্রতিক্ষার পরে মালায়শিয়াতে আবারো অবৈধ থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের বৈধতার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সে দেশের সরকার। যাথা সময়ে পাসপোর্ট প্রদান না করলে অনেকেই বৈধ হতে পারবেন না বলে অনেকেই এ মন্তব্য করছেন। বাংলাদেশ সরকার যদি অবৈধ প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে অবৈধ অবিবাসীরা বৈধতার আওতায় আসতে পারবে বলে প্রবাসীরা মনে করছেন।